কভিড-১৯ থেকে সুরক্ষার হালনাগাদ মৌলিক নীতিমালা

নতুন করোনাভাইরাস SARS-CoV-2 এর কারনে সৃষ্ট রোগের নাম কভিড-১৯।

  • করোনাভাইরাসটি অত্যন্ত সংক্রামক অর্থাৎ এটি মানুষের মধ্যে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে
  • এটির উপসর্গগুলো ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু এর উপসর্গের মতোই দেখা দিতে পারে এবং আরও গুরুতর শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে
  • কভিড-১৯
  • আমাদের শ্বসনতন্ত্রের জন্য খুব মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে, যা শ্বাস নিতে অসুবিধা সৃষ্টি করে
  • এটি কখনও কখনও হার্টকে আক্রান্ত করতে পারে যা হার্টের পেশীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে
  • যে কোনও ব্যক্তি কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন, তবে এটি মানুষকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে
  • কিছু লোকের মধ্যে কেবল ফ্লুর মতো হালকা লক্ষণ থাকে এবং সহজেই ভালো হয়ে যায়
  • তবে অন্যান্য লোকেরা মারাত্মক ও কষ্টকর ইনফ্লুয়েঞ্জায় ভোগেন
  • কিছু লোক মারা যেতে পারে
  • কভিড-১৯ তাদের জন্য মৃত্যুর কারণ হতে পারে যারা:
  • বয়োজ্যেষ্ঠ
  • যাদের দুর্বল বা ঝুঁকিপূর্ণ রোগ প্রতিরোধ অবস্থা রয়েছে
  • যাদের সংবেদনশীল শারীরিক অবস্থা
  • যাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা করা হয় না
  • দরিদ্র এবং পর্যাপ্ত খাবার এবং পুষ্টি এবং / অথবা আবাসন নেই
  • দরিদ্র এবং ভাল স্বাস্থ্যসেবার পাওয়ার সুযোগ নেই বা এটির সামর্থ্য নেই
  • কভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা, ডায়রিয়া, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা এবং অবসাদ এবং ঘ্রান হারানো
  • কভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এই সমস্ত লক্ষণের কিছু কিছু লক্ষণ বা সকল লক্ষণ থাকতে পারে
  • কভিড-১৯ আক্রান্ত সকল ব্যক্তিদের ঘ্রান অনুভূতি হ্রাস পায় না
  • যে কোনও ধরণের “ঘ্রান শক্তি পরীক্ষা” বিশ্বাসযোগ্য নয় কারণ কভিড-১৯ আক্রান্ত প্রত্যেকেই তাদের ঘ্রান অনুভূতি হারায় না
  • আপনি কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হতে পারেন এবং এখনও ঘ্রান পেতে সক্ষম হতে পারেন, একই সাথে অন্যদের সংক্রামিত করছেন

কভিড-১৯ রোগের ২ থেকে ১৪ দিনের সুপ্তাবস্থা বা লক্ষন প্রকাশ কাল থাকে।

  • “সুপ্তাবস্থা কাল”বলতে করোনাভাইরাস শরীরে ঢোকার পর এবং কভিড-১৯ রোগের লক্ষণগুলি প্রকাশ শুরুর মধ্যকার সময়কে বুঝায়
  • এই সময়ের মধ্যে আপনি হয় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, আরোগ্য লাভ করেছেন, বা আপনি খুঁজে পেয়েছেন আপনার কভিড-১৯ নেই
  • এজন্য প্রস্তাবিত সেল্ফ আইসোলেশনবা কোয়ারেন্টাইন সময়কাল ১৪ দিন
  • কিছু লোকের ২ বা ৩ দিন পরে উপসর্গ প্রকাশ পায়
  • কিছু লোকের ১০ বা ১২ দিনের মধ্যে কোনও উপসর্গ দেখা যায় না
  • কিছু লোকের একেবারেই কোনও উপসর্গ দেখা যায় না,

কেউ নতুন করোনাভাইরাস এবং কভিড-১৯ রোগ প্রতিরোধক নয়।

  • যেসব লোকের কভিড-১৯ রয়েছে তবে কোনও লক্ষণ নেই তারাও রোগ প্রতিরোধক নয়
  • তারা এখনও অন্য লোককে সংক্রামিত করতে পারে
  • এবং এরা করোনাভাইরাসটি ছড়িয়ে দেয় এবং আমাদের পরিবারের সদস্য, বন্ধু বান্ধব এবং সহকর্মীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে
  • যে সকল ব্যক্তির কভিড-১৯ ছিল এবং সুস্থ হয়েছেন তারা পুনরায় আক্রান্ত হতে পারেন
  • কিছু দেশে পুনরায় সংক্রমণের হার বেশি, যেখানে কভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়া লোকেরা আবার আক্রান্ত হয়েছেন
  • তাদের কোনও প্রতিরোধ ক্ষমতা নেই

করোনাভাইরাস সংক্রামিত ব্যক্তির থেকে শারীরিক তরল কনার মাধ্যমে ছড়াতে পারে, বিশেষত কাশি বা হাঁচি থেকে ড্রপলেট বা ক্ষুদ্র তরল কনার মাধ্যমে।

এই ড্রপলেট গুলি যদি সরাসরি আমাদের নাক, মুখ বা চোখের মধ্যে করোনাভাইরাস বহন করে তবে আমরা সংক্রামিত হতে পারি।

  • এই ঘটনার ঝুঁকি কমাতে ২ মিটার দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখার পরমর্শ দেওয়া হয়
  • অতি ক্ষুদ্র ড্রপলেটগুলি বাতাসে এবং আপনার চারপাশের অন্যদের কাছে যাওয়া বাধা দিতে আপনাকে অবশ্যই আপনার কনুইতে কাশি বা হাঁচি দিতে হবে
  • বাইরে যাওয়ার সময় এবং / বা অন্যান্য ব্যক্তির সাথে কথা বলার সময় প্রত্যেককে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে
  • মাস্ক এই ড্রপলেটগুলিকে আমাদের মুখ বা নাকের মধ্যে প্রবেশ বন্ধ করতে সহায়তা করবে
  • আমরা সুতি কাপড় এবং অন্যান্য উপযুক্ত উপকরণ দিয়ে তৈরি মাস্ক ব্যবহার করতে পারি
  • বেশি কার্যকর হওয়ার জন্য মাস্কগুলি তিন স্তরের হওয়া উচিত:
  • মাস্কের বাইরের স্তরে ড্রপলেট আটকে ফেলা, যাতে সেটি আমাদের মুখ এবং নাকের মধ্যে প্রবেশ করতে প্রতিরোধ করে
  • আমাদের মাস্ক এর অভ্যন্তরে ড্রপলেট আটকে রাখা, যাতে হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে ড্রপলেটগুলি বাতাসে বের না হতে পারে
  • এই সুরক্ষার জন্য আমাদের কমপক্ষে দু’স্তরের মাস্ক প্রয়োজন এবং তিনস্তরের মাস্ক আরও বেশি কার্যকর
  • আর একটি সম্ভাবনা হ’ল দু’স্তরের পকেটযুক্ত মাস্ক যার ভিতর ডিসপোজেবল টিস্যু ঢুকানো যায় এবং যা ব্যবহার করার পরে ফেলে দেওয়া যায়
  • একক স্তরযুক্ত মাস্ক কার্যকর নয় কারণ ক্ষুদ্র তরল কনাগুলি এটি ফুটো করে ভিতরে প্রবেশ করে বা বের হয়ে অন্যকে সংক্রমণ বা সংক্রামিত করার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে
  • ক্ষুদ্র তরল কনা করোনাভাইরাসকে বাতাসে ছড়িয়ে দেয় যা ৩০ মিনিটের জন্য বাতাসে ভাসমান থাকে এবং সম্ভবত ৩ ঘন্টা পর্যন্তও ভাসমান থাকতে পারে
  • এ্যারোসোল স্প্রে (যেমন এয়ার ফ্রেশনার, ডিওডোরেন্ট, পারফিউম, মশার স্প্রে) যেমন ক্ষুদ্র তরল ফোঁটার বিক্ষেপণ তৈরি করে যা বাতাসে ভাসমান থাকতে পারে, ঠিক এর মতো করোনাভাইরাস বহনকারী অতি ক্ষুদ্র ড্রপলেট বাতাসে ভাসতে পারে
  • সুতরাং মাস্ক পরা গুরুত্বপূর্ণ
  • ক্ষুদ্র ড্রপলেট গুলি অবশেষে মাটি বা নীচের অন্যান্য বস্তুর উপরিভাগে পড়ে
  • আপনি যদি অন্যের সাথে একটি কক্ষে থাকেন তবে সর্বদা মাস্ক পরা প্রয়োজন
  • দূরত্ব বজায় রাখুন এবং লোক সংখ্যা হ্রাস করুন
  • বাতাসে ছোট ছোট ড্রপলেট ছড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে সেখানে ভাল আলো বাতাস চলাচল থাকা উচিত

লোকজন প্রায়শই তাদের হাত দিয়ে নাক এবং মুখ স্পর্শ করে, বিশেষত যখন তারা ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়। যদি আমরা করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হই তাহলে এটি সম্ভব যে ভাইরাস বহনকারী ক্ষুদ্র ড্রপলেট আমাদের হাতে রয়েছে।

  • সুতরাং হাত স্পর্শ করে মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ করতে পারে
  • আমরা হাত স্পর্শ করি, তারপরে আমরা আমাদের নাক, মুখ বা চোখ স্পর্শ করি এবং সংক্রামিত হই
  • সুতরাং কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত সাবান এবং পানি দিয়ে ঘন ঘন আমাদের হাত ধোয়া উচিত
  • যদি সাবান এবং পানি না থাকে তবে আমাদের উচিত অ্যালকোহল ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা
  • যদি আমরা আমাদের হাত দিয়ে নাক বা মুখ স্পর্শ করি এবং এরপরে দরজার হাতলগুলি এবং অন্যান্য পৃষ্ঠগুলিকে স্পর্শ করি তবে ভাইরাসটি এই দরজার হাতল এবং পৃষ্ঠগুলিতে লেগে থাকতে পারে
  • তারপরে অন্যান্য লোকেরা যারা এই দরজার হাতল বা পৃষ্ঠগুলিকে স্পর্শ করবে তারা সংক্রামিত হতে পারে, কারণ তারা তাদের নাক, মুখ বা চোখ স্পর্শ করবে
  • এটি আমাদের ত্বকের মাধ্যমে ছড়ায় না
  • ভাইরাসটি ৩ দিন পর্যন্ত কোন কিছুর পৃষ্ঠের উপর অথবা অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা পরিবেশে আরো দীর্ঘসময় সক্রিয় থাকতে পারে
  • সুতরাং কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান এবং পানি দিয়ে ঘন ঘন আমাদের হাত ধোয়া উচিত
  • যদি সাবান এবং পানি না থাকে তবে আমাদের অ্যালকোহল ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা উচিত
  • আমাদের অবশ্যই নিয়মিত দরজার হ্যান্ডেলগুলি এবং কোন কিছুর উপরিভাগ জীবাণুমুক্ত করতে হবে

যেমনটি আমরা ইতিমধ্যে বলেছি, আমরা যদি হাঁচি বা কাশি দেই তাহলে বাতাসে করোনাভাইরাস বহনকারী ক্ষুদ্র ড্রপলেট গুলি ৩০ মিনিটের জন্য এবং সম্ভবত ৩ ঘন্টা পর্যন্ত বাতাসে থাকতে পারে।

  • এই ড্রপলেট গুলি তারপর নিচে পড়ে যায়
  • ভাইরাসটি ৩ দিন পর্যন্ত কোন কিছুর উপরিভাগে সক্রিয় থাকতে পারে
  • যদি আমরা এই পৃষ্ঠগুলি স্পর্শ করি এবং তারপর আমাদের নাক, মুখ বা চোখ স্পর্শ করি, তবে আমরা সংক্রামিত হতে পারি
  • সুতরাং কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় ধরে সাবান এবং পানি দিয়ে ঘন ঘন আমাদের হাত ধোয়া উচিত
  • যদি সাবান এবং পানি না থাকে তবে আমাদের অ্যালকোহল ভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা উচিত
  • আমাদের অবশ্যই নিয়মিত ঘড়ের মেঝে বা ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা হয় এমন বস্তুর উপরিভাগ জীবাণুমুক্ত করতে হবে

আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে:

  • সর্বদা মাস্ক পরুন
  • সর্বদা আপনার হাত সাবান দিয়ে ধৌত করুন বা হ্যান্ড-স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন
  • যদি আপনার লক্ষণ থাকে বা কভিড-১৯ পজেটিভ সনাক্ত কারও সংস্পর্শে থাকেন তবে  আপনার স্ব-বিচ্ছিন্নতা বা পৃথকীকরণ প্রয়োজন
  • আপনার কভিড-১৯ সোয়াব টেস্ট করা উচিত
  • সেলফ আইসোলেশন, সেলফ-কোয়ারেন্টাইন এবং কোয়ারেন্টাইন কভিড-১৯ রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রন করার কার্যকর ব্যবস্থা
  • নিজেকে স্ব-বিচ্ছিন্ন রাখলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ কম থাকে
  • স্ব-বিচ্ছিন্নতা, কোয়ারেন্টাইন, শারীরিক দূরত্ব এবং (যথাসম্ভব) বাড়িতে থাকার মাধ্যমে, আমরা সকলেই করোনাভাইরাসকে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগগুলি হ্রাস করতে সহায়তা করি
  • করোনাভাইরাস এর যাওয়ার কোন জায়গা থাকবে না!
  • করোনাভাইরাস সংক্রামিত করার জন্য যখন নতুন লোককে খুঁজে পাবে না, তখন কভিড-১৯ রোগটি নিয়ন্ত্রণ ও দমন করা যবে… অবশেষে চলে যেতে হবে।

শুধু মনে রাখবেন – আমরা একসাথে কভিড-১৯ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমরা করোনাভাইরাস সংক্রামিত লোকদের সাথে লড়াই করছি না।

Leave a Reply

Discover more from IUF Asia/Pacific

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading